অধ্যায় ১: শুরু
একটি ছোট্ট গ্রামে বাস করত রাজু নামের এক ছেলে। রাজুর বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর, কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল আকাশছোঁয়া। সে চাইত জীবনে বড় কিছু করতে, তবে তার পরিবার ছিল গরিব। তারা কষ্ট করে দিন কাটাত, তবুও রাজু কখনও হাল ছাড়েনি। সে প্রতিদিন স্কুলে যেত, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করত এবং রাতে মায়ের সাথে ঘরের কাজেও সাহায্য করত।
অধ্যায় ২: বাধা
একদিন রাজুর স্কুলে একটি প্রতিযোগিতার ঘোষণা হল। প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল “তোমার স্বপ্নের পেশা”। রাজু নিজের সমস্ত মন-প্রাণ দিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখল যেখানে সে তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নের কথা লিখেছিল। কিন্তু তার শিক্ষক তাকে বলল, “তুমি তো গরিবের ছেলে, ডাক্তার হতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন। তোমার এই স্বপ্ন পূরণ করা অসম্ভব।”
রাজু সেই কথা শুনে খুব কষ্ট পেল। তবে তার মা তাকে বলল, “রাজু, স্বপ্ন বড় হওয়ার কোনো মূল্য নেই। যদি তুমি সত্যি চাও, তবে কোনো বাধাই তোমাকে থামাতে পারবে না। মনে রাখবে, পরিশ্রম কখনও বৃথা যায় না।” মায়ের এই কথাগুলো রাজুর মনে গভীরভাবে প্রভাব ফেলল।
অধ্যায় ৩: পরিবর্তন
পরের দিন থেকেই রাজু তার স্বপ্ন পূরণের জন্য আরও বেশি মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা শুরু করল। সে জানত, গরিবের ছেলে হলেও তার মনোবল অনেক বড়। রাজু প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করত, এবং সময়ের সাথে সাথে তার ফলাফলও আসতে শুরু করল। পরীক্ষায় সে ভালো ফলাফল করতে লাগল, এবং তার শিক্ষকরাও তাকে উৎসাহ দিতে শুরু করল।
অধ্যায় ৪: সাফল্য
বছর দু’পর রাজু তার স্কুলের বোর্ড পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করল। এই সাফল্যের পর, সে সরকারি একটি বৃত্তি পেল, যা তাকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে সাহায্য করল। কলেজের পড়াশোনাও সে কঠোর পরিশ্রমের সাথে চালিয়ে গেল এবং শেষমেশ একজন সফল ডাক্তার হয়ে উঠল।
অধ্যায় ৫: শিক্ষা
ডাক্তার হওয়ার পর রাজু তার সেই শিক্ষকের কাছে গিয়ে বলল, “স্যার, আপনার সেই কথাগুলো আমাকে থামিয়ে দিতে পারত। কিন্তু আমার মা আমাকে শিখিয়েছে, কোনো স্বপ্নই অসম্ভব নয় যদি আমরা সঠিক পথে এগিয়ে যাই।” সেই শিক্ষক রাজুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন, “তুমি আমাকে ভুল প্রমাণ করেছ, এবং আমি খুশি যে তুমি তা করতে পেরেছ।”
উপসংহার
রাজুর গল্প থেকে আমরা শিখতে পারি, জীবনে যেকোনো বাধাই আসুক না কেন, যদি আমরা দৃঢ় মনোবল আর কঠোর পরিশ্রম নিয়ে এগিয়ে যাই, তাহলে সাফল্য আমাদের পথেই আসবে। সবসময় মনে রাখতে হবে, স্বপ্ন দেখার সাহস আর তা পূরণের জন্য পরিশ্রম করার ক্ষমতাই আমাদের জীবনের সবথেকে বড় সম্পদ।